রাণীশংকৈলে ইউটিউব দেখে বেগুনি রঙের বাধা কপি চাষ

নাজমুল হোসেন, ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি:- বর্তমান সময়ে অনলাইন বুঝেনা এমন খুব কম ব্যক্তি আছে গোটা পৃথিবীর মতো বাংলাদেশও। তাই তো সেই অনলাইন প্লাটফর্ম  গুগুলের সহায়তায় ইউটিউবে ভিডিও দেখে রাণীশংকৈলে প্রথমবারের মতো বেগুনি কালারে বাধাঁ কপির চাষাঁবাদে উদ্ভুদ্ধ হয়েছিলেন কৃষক সোহরাব আলী ইনসান আলী। বেগুনি কালারে বাধাঁ কপির বীজ প্রথমে স্থানীয় উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের খোঁজ করলেও তারা এর সন্ধান দিতে পারেনি। পরে সেই ইউটিউবের ভিডিও দেখেই নাম্বার সংগ্রহ করেন একটি বীজ কোম্পানীর সেই কোম্পানির সহায়তায় ঢাকার সিদ্দিক বাজার থেকে বীজ সংগ্রহ করে চারা রোপন করেছিলেন কৃষক সোহরাব আলী। এখন তার গোটা খেত বেগুনি কালারের বাধাঁকপিতে ভরাপুর। এ খেত দেখার জন্য জমির পাশে প্রায় প্রতিদিনই ভিড় করছেন বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ। তাই বেগুনি বাধাঁ কপিতে স্বপ্ন বুনছেন ঠাকুরগাঁও রাণীশংকৈল উপজেলার উমরাডাঙ্গী বটতলী গ্রামের কৃষক সোহরাব আলী।

 সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সোহরাব আলী বেগুনি বাধা কপিঁর খেতের পাশেই তার ভুট্টা খেতে পানি সেচ দিচ্ছিলেন। প্রতিবেদকের পরিচয় জানতে পেরে বাধাঁ কপির খেতের পাশে আসেন। এ সময় তিনি বলেন, এমন সবজি রোপন করলাম এ সবজি দেখতে দিনের বেলা যখন তখন লোকজন আসছে । তাই সারাদিন খেতেই সময় দিচ্ছি। সোহরাব আলীর প্রায় ১০ কাঠা জমিতে বেগুনি বাধাঁ কপির আবাদ করেছেন। খেত জুড়ে বেগুনি পাতায় ভরে রয়েছে। আশপাশের সব খেতের থেকে এর কালার আলাদা হওয়ায় দূর থেকেই বুঝা যায় এটি আলাদা কোন ফসল। বাধা কপিটি শুরু থেকে রঙ্গিন কিন্তু পরে এটি বেগুনি কালারে রুপান্তর হয়। সাইজ খুব বড় না হলেও এক কেজি থেকে এক কেজি চারশত গ্রাম প্রযর্ন্ত এর ওজন হয়ে থাকে।

কৃষক সোহরবা আলী আরো জানান, এ কপিটি চাষে পরিশ্রম খুব কম। কীটনাশক স্প্রে করতে হয় অন্যান্য বাধাকপির তুলনায় অনেক কম। ফলন ভালো দেয়। ৮০ থেকে ৮৫ দিনের মধ্যে ফলন দেওয়া শুরু করে। খরচ কম,লাভ বেশি। তিনি জানান, ১০ কাঠা জমিতে চাষাবাদ করে ৬ থেকে ৭ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। এ যাবত ২০ টাকা কেজিতে বিশ হাজার টাকার কাছাকাছি বিক্রি করেছি। খেতে যা ফসল আছে তা আরো ৫ থেকে ৭ হাজার টাকায় বিক্রি করা যাবে। সোহরাব আলী আরো জানান, আগামীতে প্রায় এক একর জমিতে তিনি বেগুনি কালারে বাধাঁকপি চাষাবাদ করবেন বলে আশা করেছেন।এবং কি সোহরাব আলী আরো বলেন প্রথম যখন আমি জমিতে চারা রোপণ করি অনেকেই অনেক কথা বলেছে কি হবে এই চাষে ভালো ফলন কি পাওয়া যাবে? মানুষের এমন মন্তব্য কে উরিয়ে দিয়েই এই বাধা কপির চাষ করেই তাক লাগিয়েছেন প্রথম বারেই।

সোহরাব আলীর মতই তার এলাকার কৃষক ইনসান আলী প্রায় ৫ কাঠা জমিতে ব্যতিক্রমি এ বাধাঁ কপি রোপন করেছেন। তবে তার খেতে এখনো ফল আসেনি। কৃষক ইনসান আলী জানান সপ্তাহ খানেকের মধ্যে ফল চলে আসবে বাধাঁ কপিও বড় হতে শুরু করবে। ইনসান আলী আরো জানান, এ কপি নিয়ে মানুষের বেশ আগ্রহ সৃষ্টি হয়েছে। অনেকে এ কপি চাষাবাদের জন্য আমাদের কাছে পরার্মশ খুজছেন। এবং আগামীতে এ কপি অনেকেই চাষাবাদ করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে তিনি জানিয়েছেন।

রাণীশংকৈল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক আব্দুস সালাম বলেন, চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায়, বেগুনি কালারের বাঁধাকপিতে রয়েছে প্রচুর অ্যান্ডিঅক্সিড্যান্ড,ভিটামিন এ,ভিটামিন সি। এছাড়াও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিসহ মানুষের হৃদরোগের সম্ভবনাও কমায়। ওজন  নিয়ন্ত্রনসহ নানা ধরনের রোগ প্রতিরোধে সহায়ক হিসাবে কাজ করে।

রাণীশংকৈল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম বলেন, বেগুনি কালারের বাধা কপি সত্যিকারের অর্থে রাণীশংকৈল উপজেলায় এবারই প্রথম। এ উপজেলায় মোট এক একর জমিতে বেগুনি কালারের বাঁধাকপি চাষাবাদ হয়েছে। এছাড়াও বেগুনি কালারের ফুলকপি ১০ কাঠা জমিতে পরীক্ষা মুলক চাষাবাদ হচ্ছে। ফলন ভালো পেলে কৃষকেরা অব্যশই আগামীতে এ সবজি চাষাবাদ করবে বলে প্রত্যাশা করছি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *