জনগণের প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ মাধবপুর উপজেলা পরিষদ 

জনগণের প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ মাধবপুর উপজেলা পরিষদ 

মাধবপুর (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধিঃ আগামী দুমাস পরেই তৃতীয় দফায় ১৭ মে মাধবপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্টিত হচ্ছে। নির্বাচনকে সামনে রেখে সাধারন মানুষের তেমন কোন আগ্রহ নেই। এর কারন হচ্ছে গত ১০ বছরে মাধবপুর উপজেলা পরিষদের জনপ্রতিনিধিরা জনগনের কল্যাণে কোন অবদান রাখতে পারেনি। উপজেলা পরিষদের যোগাযোগ, রাস্তাঘাট, কৃষি সেচ আইনশৃঙ্খলা, স্বাস্থ্য ও  পরিবার পরিকল্পনা, যুব ও ক্রীড়া, সমাজকল্যান, মহিলা ও শিশু বিষয়ক সহ ১৭ স্থায়ী কমিটি রয়েছে। এসব স্থায়ী কমিটিতে উপজেলা চেয়ারম্যান ও দুজন ভাইস চেয়ারম্যানকে প্রধান করে উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহন করা হয়। কিন্তু মাধবপুরে এসব কমিটি শুধু কাগজে কলমে। স্থায়ী কমিটির উপজেলা চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যানরা ইউনিয়ন পরিষদেও চেয়ারম্যান এবং উপজেলা পরিষদের দপ্তর প্রধানদের নিয়ে কয়েক মাস অন্তর অন্তর মাধবপুর উপজেলার জনগনের সমস্যা শনাক্ত করে এগুলো বাস্তবায়ন করার কথা থাকলেও কার্যত কোন সভা করা হয়নি। এ নিয়ে উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ক্রোভ প্রকাশ করেছেন। মাধবপুর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মজিব উদ্দিন তালুকদার ওয়াসিম বলেন, মাধবপুর উপজেলা পরিষদে ভাইস চেয়ারম্যানদের তেমন কোন ভুমিকা নেই। স্থায়ী কমিটিতে ভাইস চেয়ারম্যানদের শুধুমাত্র কাগজে কলমে রাখা হয়েছে। উপজেলা পরিষদের বাজেট প্রনয়ন, সরকারি উন্নয়ন পরিকল্পনায় এবং জনগনের চাহিদা মেটাতে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যানদের কোন মতামত নেওয়া হয়না। উপজেলা পরিষদের রাস্তাঘাট,শিক্ষা , যোগাযোগ, কৃষিখাতে তেমন কোন উন্নয়ন হয়নি। সরকারের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে মোটা অংকের বরাদ্ধ থাকলেও উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যানদের কোন প্রকল্প গ্রহন করা হয়না। প্রকল্প প্রনয়নে দলীয়করন, স্বজনপ্রীতি গ্রহণ করা হয়। মাধবপুর উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান শ্রীধাম দাশগুপ্ত বলেন, মাধবপুর উপজেলা পরিষদের ৩ জন জনপ্রতিনিধি গত ১০ বছরে মাধবপুর উপজেলা ৪ লাখ মানুষের উন্নয়নে আশানুরূপ অবদান রাখতে পারেনি। একারনে এবার মাধবপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচন নিয়ে সাধারন মানুষের তেমন কোন আগ্রহ নেই। এছাড়া বিজয় দিবস, স্বাধীনতা দিবস, জাতীয় শোক দিবস, জাতীয় শিশু দিবস, জাতীয় শহিদ দিবসসহ সকল জাতীয় দিবসে উপজেলা পরিষদের পক্ষ থেকে যথাযোগ্য মর্যাদায় দিবস গুলো পালন করা হয়নি। এনিয়ে সাধারন মানুষের মধ্যে অনেক ক্ষোভ রয়েছে। তিনি আরো বলেন উপজেলা পরিষদের ১৭টি স্থায়ী কমিটি কার্যক্রমকে আরো গতিশীল ও কার্যকর করতে জাপান সহায়তা সংস্থা জাইকার পক্ষ থেকে প্রতি বছর ৫০ লাখ টাকার বরাদ্ধ দেওয়া হয়। এর মধ্যে ১০ লাখ টাকা বিভিন্ন অংশীজনদের নিয়ে প্রশিক্ষণ। তবে স্থায়ী কমিটি কার্যকর না হওয়ায় এসব প্রশিক্ষণ বাস্তবে কোন কাজে আসেনা।  তেলিয়াপাড়া চা বাগানের শ্রমিক নেতা স্বরজিত পাশী বলেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ভাইস চেয়ারম্যানদের কাছে ৫টি চাবাগানে কয়েক হাজার শ্রমিকের অনেক চাওয়া পাওয়ার ছিল। কিন্তু গত ১০ বছরে উপজেলা পরিষদের জনপ্রতিনিধিরা চা শ্রমিকদের সার্বিক উন্নয়নে কোন ভুমিকা রাখেনি। প্রতি বছর বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) কর্মসূচির আওতায় পিছিয়ে পড়া জনগোষ্টির জন্য বরাদ্ধ দেওয়ার নিয়ম থাকলেও চা বাগানে চাশ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়নে কোন বিশেষ বরাদ্ধ দেওয়া হয়নি। চা শ্রমিকদের অবহেলার চোখে দেখা হয়েছে। তাই এখন উপজেলা পরিষদ নির্বাচন নিয়ে চা শ্রমিকদের মধ্যে তেমন আগ্রহ নেই। মাধবপুর উপজেলা পরিষদ ডাল নেই তলোয়ার নেই যেন নিধিরাম সর্দার।  মাধবপুর উপজেলা পরিষদের দুবার নির্বাচিত মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান এডঃ সুফিয়া আক্তার হেলেন বলেন, মাধবপুর উপজেলা পরিষদের ১৭টি স্থায়ী কমিটি রয়েছে। এসব স্থায়ী কমিটি সভাপতি হলেন দুজন ভাইস চেয়ারম্যান। উপজেলা পরিষদের সরকারি দপ্তরের প্রধানরা হলেন স্থায়ী কমিটির সদস্য সচিব। দুমাস অন্তর অন্তর স্থায়ী কমিটির সভায় উন্নয়ন পরিকল্পনা নিয়ে সিদ্ধান্ত হয়। এগুলো মাসিক সভায় উপস্থাপন করা হয়। কিন্তু ্স্থায়ী কমিটির কোন সিদ্ধান্তকে গুরুত্ব দেওয়া হয়না। উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যানদের টিআর, কাবিখা, কাবিটা, এডিপি প্রকল্প থেকে কোন বরাদ্ধ দেওয়া হয়না। যেকারনে জনগনের উপকার করা সত্বেও কোন কোন উপকার করা যায়নি। মাধবপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সৈয়দ মোঃ শাহজাহান বলেন, গত ১০ বছরে মাধবপুর উপজেলার উন্নয়নে চেষ্টার কোন ক্রুটি ছিলনা। মানুষের আশা আকাঙ্খা পুরন করতে সক্ষম হয়েছি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *